সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:২১ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
২০২৫-২০২৬ সেশনের জন্য চিলাউড়া-হলদিপুর ইউনিয়ন জামায়াতের কমিটি ঘোষণা শান্তিগঞ্জে বর্ণাঢ্য আয়োজনে দৈনিক ভোরের চেতনার প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন  জগন্নাথপুরে স্কুল শিক্ষার্থীর গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা নতুন ইসি শপথ নেবেন রোববার দীর্ঘ ১৩ বছর পরে বিশিষ্ট কলামিস্ট, লেখক ও সাংবাদিক সায়েক এম রহমান এর বাংলাদেশে আগমন সুনামগঞ্জ-৩ আসনে সৈয়দ তালহা আলমকে জমিয়তের প্রার্থী ঘোষণা  জগন্নাথপুরে বিএনপি কার্যালয় ভাঙচুর; সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রীসহ ৪৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা জগন্নাথপুরে যুক্তরাজ্যের এএন টিভি’র পরিচালকের সঙ্গে মতবিনিময় সভা একযুগ পর সেনাকুঞ্জে খালেদা জিয়া জগন্নাথপুর উপজেলা জামায়াতের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ও মজলিশে শূরা গঠন

বৈশাখ মাসের ৫/৭ তারিখে ধান কাটার ধুম পড়বে : জগন্নাথপুরে কৃষকদের মধ্যে ব্যাপক প্রস্তুতি চলছে

বৈশাখ মাসের ৫/৭ তারিখে ধান কাটার ধুম পড়বে : জগন্নাথপুরে কৃষকদের মধ্যে ব্যাপক প্রস্তুতি চলছে

সানোয়ার হাসান সুনু /রেজুওয়ান কোরেশী ::  লুটপাটের পরও সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার বৃহৎ হাওর নলুয়ার হাওরে কতেক জায়গায় মোটামোটি বাঁধ লক্ষণীয়, তবে বিভিন্ন স্থানে কাজ হয়েছে খুবই নিম্ন মানের দায়সারা। পোল্ডার-১ ও ২ এর অনেক বেরীবাধ সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী কাজ হয় নি। পুরাতন বেরীবাঁধের অনেক জায়গায় মাটি পড়েনি। হাওরের পূর্বপ্রান্তের স্টীল ব্রীজ থেকে ইসমাইল চক বায়া বাউধরন বেরীবাধের অধিকাংশ স্থানেই মাটি পড়েনি। এ বাঁধের কিছু কিছু অংশে ১ ফুট থেকে দেড় ফুট করে দায়সারা ভাবে কিছু বালি মাটি ফেলা হয়েছে। অন্য দিকে বেরী জামে মসজিদ থেকে গোপরাপুর বাজার পর্যন্ত হাওর রক্ষা বেরীবাধে বেশীরভাগ অংশে মাটি ফেলা হয় নি। ফলে হাওরগুলো রয়েছে ঝুকির মধ্যে। অনেক বাঁধে এভাবে দায়সারা ভাবে কাজ করে মোটা অংকের টাকা আত্মসাতের চেষ্টা চলছে। বেরীবাঁধ নিয়ে কৃষকদের মধ্যে রয়েছে নানা অভিযোগ ও উৎকন্ঠা। সরজমিন হাওর এলাকা পরিদর্শনে গেলে পর পর দুইবার ফসল হারানো অভাবী কৃষকদের সাথে আলাপ হলে তারা বলেন, আমরা একমাত্র মহান আল্লাহ পাকের উপর ভরসা করে আছি। আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে বৈশাখ মাসের ৫/৭ তারিখে ধান কাটার ধুম পড়ে যাবে ইনশাআল্লাহ। কৃষকদের মধ্যে ধান কাটার সার্বিক প্রস্তুতি চলছে। হাওর পাড়ের বেতাউকা গ্রামের কৃষক মফিজ মিয়া বলেন, নলুয়ার হাওরের বোরো ধানের ফসল ভাল হয়েছে। তবে আগন রোয়া অর্থ্যাৎ অকাল বন্যার ভয়ে অগ্রাহায়ন মাসের শেষ দিকে ও পৌষ মাসের শুরুতে যারা ধান রোপন করেছেন, তাদের ফলন তেমন একটা ভাল হয়নি। তবে মাঘ মাসে যারা ধান রোপন করেছেন তাদের ফলন ভাল হয়েছে।  হাওর পাড়ের বেরী গ্রামের কৃষক শাহজাহান বলেন এবার ২৮/২৯ ফলন ভাল হয়েছে। তবে আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে বৈশাখের ৫/৭ তারিখে ধান কাটার ধুম পড়ে যাবে ইনশাআল্লাহ। তিনি বলেন, আমরা ধান কাটার প্রস্তুতি নিচ্ছি। শ্রমিক সংকট রয়েছে, শ্রমিক খোজে পাওয়া যাচ্ছে না। হাওর ঘুরে দেখা যায়। কাচা ধানের শীষ বাতাসে ধুলছে। সোনালী বর্ণ ধারন করে ধান পাকতে শুরু করেছে। কৃষকরা কষ্টে বুক বেধে আছেন হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রমের সোনালী ফসল ঘরে তুলতে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের হাত থেকে ফসল রক্ষায় সর্বশক্তিমান আল্লাহ পাকের সাহায্য কামনা করে হাওর অঞ্চল আধ্যূষিত উপজেলার মসজিদ গুলোতে শুক্রবার জুম্মার নামাজের সময় দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা সদর জামে মসজিদে মোনাজাত পরিচালনা করেন, মসজিদের পেস ইমাম মাওলানা আজমল হোসেন জামী, এ সময় বিপুল সংখ্যক মুসল্লী মোনাজাতে শরীক হন। এ দিকে উপজেলার পিংলার হাওরে বোরো ফসল ভাল না হওয়ায় কৃষকদের মধ্যে হতাশা দেখা দিয়েছে। হাওর পার্শ্ববর্তী জগন্নাথপুর গ্রামের কৃষক শামীম আহমদ জানান, ৮ কেদার (৩০ শতকে ১ কেদার) জমি করেছিলাম, জমির অনেক ধান নষ্ট হয়ে গেছে। একই গ্রামের কৃষক আতাউর রহমান বলেন, ১২ কেদার জমিতে ২৮ জাতের ধান রোপন করেছিলাম। পোকার আক্রমনে অধিকাংশ ধান নষ্ট হয়ে গিয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বৃহৎ হাওর নলুয়া, মই ও পিংলার হাওরসহ ছোট বড় ১৫ টি হাওরে প্রায় ২৫ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ফসল আবাদ করা হয়েছে। এর মধ্যে নলুয়ার হাওরে প্রায় ১০ হাজার হেক্টর জমিতে ২৮/২৯ জাতের ধান রোপন করা হয়েছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শওকত ওসমান মজুমদারের সঙ্গে আলাপ হলে তিনি দৈনিক যুগান্তরকে জানান, সময় মত কিটনাশক না দেওয়া ও অতিরিক্ত টান্ডাজনিত কারণে পিংলাসহ ছোট বড় কয়েকটি হাওরে ধান চোচা (চিটা) হয়ে নষ্ট হয়েছে। তিনি বলেন, সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী বেরীবাঁধ না হওয়ায় কৃষকদের সাথে আমরাও চিন্তার মধ্যে আছি। সঠিক উচ্চতা দিয়ে অনেক বাঁধ হয় নি। যে বাঁধ হয়েছে সেগুলো দোর্মুজ দিয়ে পিটিয়ে মজবুত (কম্পেকশন) করা হয় নি। এখনও সময় আছে, কৃষক ও হাওরের স্বার্থে এগুলো করা উচিত। উল্লেখ্য জগন্নাথপুর উপজেলার ৬৮ কিলোমিটার হাওর রক্ষা বেরীবাঁধ মেরামত ও নির্মানে সরকার সাড়ে ১৪ কোটি টাকা বরাদ্দ দেন। বাঁধ নিয়ে দলীয় করন ও স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে ৯২টি পিআইস গঠন করা হয়। দায়সারা কাজ করে মোঠা অংকের টাকা লুটপাটের অভিযোগ রয়েছে ক্ষতিপয় পিআইসি সভাপতিদের মধ্যে। কাজের সিডিউলে ঘাস লাগানো ও মাটির স্থায়িত্ব (কম্পেকশন) মজবুত করার জন্য আলাদা টাকা দেওয়া হলেও সেটা করা হয়নি। ইতিমধ্যে ২য় কিস্তি প্রায় ৭ কোটি টাকা তুলে নিয়েছে পিআইসিগুলো।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published.

© All rights reserved © 2017-2023 Jagannathpurnews.Com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com